বিগত কয়েক বছরের তুলনায় বেড়েছে বাড়ছে হাতি মারা যাওয়ার সংখ্যা। গত ৯ মাসেই মারা গেছে ১২টি হাতি। তাই দেশজুড়ে হঠাৎ বন্যপ্রাণী হত্যা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন ফাইটিং মুভমেন্ট (জিএফএম)।
১৭ জুন, বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি। এতে বলা হয়, ”সম্প্রতি দেশে হাতি, বানর ও ডলফিনসহ নানা ধরণের বন্যপ্রাণী হত্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজার জেলায় বনভূমি উজাড়, সীমান্তে মাইন এবং বনাঞ্চল এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে হাতি চলাচলের করিডোর বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে সংগঠনটি জানায়, ”গত তিনদিনে তিনটি হাতির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৩ বছরে মানুষের হাতে ৬২টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। ২০১১-১৩ সালে প্রতিবছর মারা গেছে গড়ে পাঁচটি করে হাতি।”
”২০১৪ সালেই মারা গেছে ৭টি। এর পরের চার বছরের তথ্য নেই। তবে গত ৯ মাসে ১২টি হাতি মারা গেছে। গত ৭ মাসে শুধু লামায়ই মারা গেছে চারটি বন্যহাতি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মরার ঘটনা ঘটছে অনেক,” উল্লেখ করে গ্রিন ফাইটিং মুভমেন্ট।
এজন্য বিদ্যুৎ বিভাগের অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ লাইনকে দায়ী করে সংগঠনটি। জানায়, ”এসব ঘটনায় মামলা হলেও অগ্রগতি হয়নি এবং এখনো বনবিভাগের উল্লেখযোগ্য কোনো তৎপরতা নেই।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ”চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের প্রায় ২৭ কিলোমিটার বন্যহাতির জন্য মরণফাঁদে পরিণত হবে। ওই রেললাইনের অন্তত ২১টি স্থানে পড়বে হাতির বসতি এবং চলাচলের পথ। তাই এ প্রকল্পে জীববৈচিত্র্যের ব্যাপকহারে ক্ষতি হবে। পৃথিবীর কোনো দেশে সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে রেললাইন নিয়ে যাওয়ার নজির নেই। বর্তমান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের পাশ দিয়ে এ রেললাইন নিয়ে যাওয়া হলে কোনো সমস্যা হতো না।”
সংগঠনটির জানায়, ”বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বা এ বিষয়ে জনগণের কাছে জবাবদিহিতার অভাব ও দায়িত্বে অবহেলার ফলে একের পর এক বন ও বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে। যা পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত দিক থেকে ক্ষতির মুখে ফেলছে। তাই প্রাণী রক্ষায় দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থাগুলো ও বন বিভাগকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং প্রাণী হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।“
একইসঙ্গে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রয়োগ এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানায় গ্রিন ফাইটিং মুভমেন্ট।