মানুষের জীবন বাঁচানো পথ কুকুরের গল্প (ভিডিও)

অসহায় মানুষের সঙ্গি তেমনই একটি কুকুর। ছবি: সংগৃহীত

“কুকুরটি আমার জীবন বাঁচিয়েছে,” বলছিলেন ফিলদা আখুমু, উগান্ডায় অপহরণের পর পালিয়ে আসা এক নারী। সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যম (বিবিসি) এক প্রতিবেদনে ‘পথ কুকুর কীভাবে অসহায় মানুষের জীবনের সঙ্গি হচ্ছে’ তা তুলে ধরে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, মাত্র তেরো বছর বয়সে ফিলদা আখুমু নামক ওই নারীকে অপহরণ করেছিল উত্তর উগান্ডার একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এরপর ভয়াবহ হিংস্রতার মুখোমুখি হন ফিলদা। তবে ভাগ্যক্রমে সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হলেও পরবর্তীতে মানসিক চাপে আক্রান্ত হন তিনি।

ফিলদা আখুমু বিবিসি-কে বলেন, “যখন আমি বাড়িতে ফিরে আসি, তখন এক ভয়াবহ দু:স্বপ্নের ভেতর ছিলাম। চোখের সামনে ভাইদের নিহত হতে দেখেছি। আমার বন্দিত্বের সময়টাও ছিল নিদারুণ যন্ত্রণার।”

ফিলদা আখুমু ও তার সঙ্গি কুকুর ওরোমো। ছবি: সংগৃহীত

ঠিক ওই সময় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় দেশটির দ্য কমফোর্ট ডগ প্রজেক্ট নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি একটি কুকুর উপহার দেয় ফিলদাকে। এরপর থেকেই তার নিত্য সঙ্গি সেটি।

অবশ্য বাচ্চা বয়সে ওই কুকুরটিকেও রাস্তায় ফেলে দেয়া হয়েছিল। হতভাগা সেই কুকুরটিও এখন পেয়েছে ফিলদার মতো বিশ্বস্থ এক বন্ধু।

সাবেক শিশু-যোদ্ধা ও যুদ্ধ থেকে বেঁচে যাওয়াদের মানসিক চাপসহ বিষন্নতা থেকে মুক্ত রাখতে পথ কুকুরকে ব্যবহার করছে এনজিওটি। এমন অসংখ্য মানুষকে সুস্থ করে তুলতে সহায়তা করছে কুকুরগুলো।

ফিলদা জানান, “কুকুরটির নাম ওরোমা, এর অর্থ- আর কোনো পরচর্চা না, তোমার বাজে কথায় আমি ব্যথিত হবো না।” তিনি বলেন, “কুকুরটি আমার জীবন বাঁচিয়েছে। যদি সে না থাকতো, তবে এতদিনে আমি মরেই যেতাম।”

কমফোর্ট ডগ প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা ফ্রান্সিস ওকেল্লো ওলোয়া বলেন, মানসিক আঘাত পাওয়াদের সুস্থ করে তুলতে সহায়তা করছে কুকুরগুলো।

বোমা বিস্ফোরণে ১২ বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারানো ফ্রান্সিসের এখন জীবনের সঙ্গি তেমনই আরেকটি কুকুর। তিনি বুঝতে পারেন, একটি কুকুরের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠলে মানসিক যন্ত্রণা লাঘব হতে পারে। দৈনন্দিন কাজ ও যাতায়াতে কুকুরটি বেশ ভূমিকা রাখে।

ফ্রান্সিস বলেন, “মানুষের মানসিক অবস্থার পরিচর্যা ও পুনর্বাসনে কুকুর সহায়তা করতে পারে। এতে খুব সহজেই বিষন্নতা জয় করা সম্ভব।”