বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় ২০ প্রজাতির দেশীয় মাছ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু। বুধবার দেশব্যাপী ২৭তম ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৯’র প্রথমদিনে এক সংবাদ সম্মেলন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, দেশীয় পাবদা, গুলশা, টেঙরা, মহাশোলসহ বিলুপ্তপ্রায় ২০টি প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে সরকার কৃত্রিম প্রজনন ও চাষাবাদ কৌশল উদ্ভাবন করায় এ মাছ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় সকল মাছ পুনরুদ্ধারে গবেষণা জোরদার করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী জানান, সমুদ্রে অনুসন্ধান ও জরিপ চালিয়ে ৪৩০টি প্রজাতির মৎস্য সম্পদের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ৩৬০ প্রজাতির মাছ, ৩৩ প্রজাতির চিংড়ি, ২১ প্রজাতির কাঁকড়া এবং ১২ প্রজাতির মোলাস্কা রয়েছে।
“মাছের উৎপাদনে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে ইলিশে প্রথম, মুক্তজলাশয়ের আহরণে তৃতীয়, তেলাপিয়ায় চতুর্থ এবং বদ্ধজলাশয়ে চাষকৃত মাছে ৫ম স্থানের অধিকারী,” উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
আশরাফ আলী জানান, খাদ্য ও মাংসের পাশাপাশি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রথমবার মাছের উৎপাদনেও দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ২ লাখ ৯৯ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদিত হলেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১৭ হাজার টনে।
সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের মজুদ ও জীববৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার, এরই অংশ হিসেবে গত ২৬ জুন নোয়াখালী জেলার হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ৩ হাজার ১৮৮ বর্গকিলোমিটার ‘সামুদ্রিক সংরক্ষিত’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন মতে, এরই মধ্যে ‘প্রায় বিলুপ্ত’ হবার পথে বাঘাইর, পিপলা শোল বা বাক্কা মাছ, মহাশোল, নান্দিলা মাছ, চান্দা, ভাঙ্গান বাটা, খরকি মাছ, কালো পাবদা, চেনুয়া মাছসহ বেশ কিছু মাছ রয়েছে।
২০০০ সালে করা সংস্থাটির প্রথম জরিপে ৫৪ প্রজাতির মাছ বিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, এরপর ২০১৫ সালে সর্বশেষ জরিপে আরো ৬৪ প্রজাতির মাছ যুক্ত হয়।
বুধবার মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের জন্য ১০টি লং লাইনার এবং ৭টি পার্স সেইনার ফিশিং লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।
ইলিশ সম্পদের স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে জেলেদের সঞ্চয়ী করার পাশাপাশি তাদের আপদকালীন জীবীকা নির্বাহের লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার একটি ‘ইলিশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ তহবিল’ গঠন করা হয়েছে।