
বিশ্ব যখন নতুন উদ্যোমে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই একদল বর্বর মেতে উঠে গাঙ্গেয় একটি ডলফিনকে নির্মমভাবে হত্যায়। গেল ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রতাপগড়ে ঘটে এই নৃশংসতা। ৮ জানুয়ারী, শুক্রবার এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ আটক করে ঘটনায় জড়িত তিনজনকে।
ভয়াবহ এই ভিডিওতে দেখা যায়, রড, লাঠি ও কুড়ুল দিয়ে আঘাত করে যাচ্ছে নির্দয় একদল পুরুষ। যাতে পালিয়ে প্রাণে বাঁচতে না পারে তাই কয়েকজন তাকে আটকে রাখে। ধীরে ধীরে গাঙের জল রক্তে লাল হয়ে যায়। জলের মধ্যে যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নিরীহ প্রাণীটি।
ভিডিওটি ভাইরাল হতেই সেটি দেখে জড়িত তিনজনকে সনাক্ত করে ভারতীয় পুলিশ। শুক্রবার তাদের গ্রেফতার করা হয়। বনবিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, একজন ব্যক্তি ডলফিন হত্যার বিষয়টি ফোন করে খবর দেয়। পরে খাল পাড়ে মৃত উদ্ধার করা হয় ডলফিনটি। বনবিভাগের এক কর্মী জানান, মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে যে ওই ঘটনার চারপাশে গ্রামবাসীদের ভিড় ছিল। কিন্ত জিজ্ঞাসাবাদের সময় কারোও থেকে তেমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভারতের জাতীয় জলজ প্রাণী গাঙ্গেয় ডলফিন বিরল প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী। চোরাশিকারীদের দাপটে এই বিরল প্রজাতীর প্রাণী এখন ভারতে বিলুপ্তপ্রায়। প্রাণীটিকে সংরক্ষণ করতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন-১৯৭২ এর সর্বোচ্চ আইনে এটিকে সংরক্ষিত প্রাণী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই ধরণের প্রাণী হত্যার কারণে বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইনের আওতায় কড়া শাস্তি হতে পারে দোষীদের।
দেশটির বনবিভাগের কর্মকর্তা পারভিন কাসওয়ান এক টুইটবার্তায় লিখেন, এসব নৃশংস ঘটনার কারণেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের কঠোর প্রণয়ন দরকার। দরকার বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ বিষয়ক আরোও সুস্পষ্ট ধারণা ও সচেতনতা।
দেশটির কর্তৃপক্ষ ঘটনায় জড়িত বাকি অপরাধীদের সন্ধানে তৎপর রয়েছে। তবে কি করে ডলফিনের মতো নিরীহ প্রাণীকে এমন জঘণ্য আক্রমণ করে হত্যা করা হল, তা বিস্মিত করেছে সচেতন মানুষদের।