বন বিভাগের হিসেবে ১৯৯২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট ১৪১টি বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এসব ঘটনায় বন বিভাগের করা একটি মামলারও রায় হয়নি বলে জানিয়েছেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সার্কেলের বন সংরক্ষক মোল্যা রেজাউল করিম।
৩০ নভেম্বর, মঙ্গলবার চট্টগ্রামের একটি হোটেলে দিনব্যাপী ট্রান্স বাউন্ডারি ওয়াইল্ডলাইফ করিডোর-এর সমীক্ষা যাচাইয়ের এক কর্মশালায় এ তথ্য জানান তিনি।
মোল্যা রেজাউল করিম বলেন,“এ হাতিগুলো মৃত্যুর ঘটনায় ২৯ বছরে ৩৭টি মামলা করা হয়েছে। ৩৭টি মামলার নিহত হাতিগুলোকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে নয়তো গুলি করে বা বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছিল। দু:খের বিষয় একটি মামলারও রায় হয়নি।”
কারণ হিসেবে বলেন,“বন বিভাগের জনবল সংকট অন্যতম কারণ। তাই মামলাগুলো আলোর মুখ দেখেনি। মূলত বিভাগের পক্ষ থেকে একজন ডেপুটি রেঞ্জাকে মামলা পরিচালনার ক্ষমতা দেয়া আছে। কিন্তু বন বিভাগে এই পদ সৃজন হলেও এখনো পদগুলো নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় খালি রয়েছে। ফলে বিবাদীরা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে খালাস পাচ্ছে।”
২০১৫ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত বাংলাদেশে মৃত্যু হয়েছে মোট ৭৬টি বুনো হাতির। তবে প্রাণী বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, গেল দু’বছরেই মারা গেছে ৪০টি বন্যহাতি। এরমধ্যে ২০২০ সালে ২২টি ও ২০২১ সালের সাড়ে ১০ মাসে ১৮টি। চলতি নভেম্বরে মারা গেছে সাতটি হাতি। বন বিভাগের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও দায়ের করা মামলায় নিহত হাতির বেশিরভাগকেই বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হত্যার বিষয়টি উঠে এসেছে।
গত ২২ নভেম্বর হাতির নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিতে বৃহত্তর চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ সারাদেশে বন বিভাগ থেকে হাতি চলাচলের জন্য চিহ্নিত ১২টি করিডর সংরক্ষণে নির্দেশনা দিয়েছেন উচ্চ আদালত। একইসঙ্গে হাতি হত্যা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সবশেষ ২৯ নভেম্বর হাতি হত্যা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষে নিতে বলেছে পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও।