মানুষ ভালোবাসলেও নিষিদ্ধ হলো সেই ডলফিনদের সঙ্গে সাঁতার

বোটলনোজ ডলফিন। ছবি: সংগৃহীত

ডলফিনের একটি প্রজাতি বোটলনোজ। এরা খুবই বুদ্ধিমান প্রাণী, আর খুবই সামাজিক। নিজেদের মধ্যে খাবারও ভাগ করে খায় এরা। মানুষকেও সঙ্গ দিতে ডলফিনটির জুড়িমেলা ভার। তবে সম্প্রতি গবেষণায় উঠে এসেছে, এ কারণে ডলফিনটি এখন হুমকির মুখে। বেড়েছে শাবক মৃত্যুর হারও।

তাই নিউজিল্যান্ডে এখন থেকে বোটলনোজ ডলফিনের সঙ্গে সাঁতার কাটতে পারবেন না পর্যটকেরা। দেশটির প্রাণী সংরক্ষণ দফতর জানিয়েছে, মানুষের সংস্পর্শ ডলফিনের বিশ্রাম ও খাদ্যে মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলে।

যদিও মানুষও ডলফিনটিকে বেশি ভালোবাসে বলে নতুন এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রাণীটির অস্তিত্ব সংরক্ষণে এ সিদ্ধান্তের বিকল্প ছিল না, বলছেন গবেষকরা।

বোটলনোজ ডলফিনের সঙ্গে সাঁতার কাটছেন পর্যটকেরা। ছবি: সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ডের উত্তরে উপসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে বোটলনোজ ডলফিনের সঙ্গে সাঁতার কাটতে পারেন পর্যটকরা। কিন্তু ১৯৯৯ সালের পর সেখানে ডলফিনের আসা-যাওয়া কমেছে ৬৬ শতাংশ। এখন কেবল ১৯টি নিয়মিতভাবে ফিরে আসে উপসাগরটিতে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ওই উপসাগরে ডলফিন শাবকের মৃত্যুহার এখন ৭৫ শতাংশ। যা বিশ্বে সর্বাধিক। এসব দিক বিবেচনা করে ডলফিনের সঙ্গে সাঁতার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর গেলো জুলাইয়ে কার্যকর করা হয়েছে নতুন আইনও।

ডলফিনের সঙ্গে সাঁতার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হওয়াতে ট্যুর অপারেটররা কেবল সকালে বা বিকেলে পর্যটকদের ওই এলাকায় নিতে পারবে। ফলে মানুষের সংস্পর্শ ছাড়া দিনের বড় একটি সময় নিজেদের মতো করে থাকতে পারবে ডলফিনেরা।

প্রাণীটি সুরক্ষায় অনেক আগে থেকেই বিধিনিষেধ থাকলেও গবেষকরা বলছেন, সেগুলো যথেষ্ট ছিল না। এদিকে যেসব দেশে বিচিত্র প্রাণীদের কাছাকাছি যেতে পর্যটকদের শখ মিটিয়ে আসতো তারাও এখন নড়েচড়ে বসেছে। কারণ মানুষের সংস্পর্শে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাণীরা। কাজেই এখন বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে সংরক্ষণেই।

এর উদাহরণ, ২০২০ সালের পর কম্বোডিয়ার অ্যাংকর ওয়াট মন্দিরে হাতির পিঠে চড়া যাবে না। পর্যটকবহনকারী ১৪টি হাতি আগামী বছরের শুরুতেই অভয়ারণ্য ও প্রজনন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিবে দেশটি।

একইরকম উদ্যোগ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই কর্তৃপক্ষও। সেখানে স্পিনার ডলফিনের সঙ্গে সাঁতার নিষিদ্ধ করতে প্রণয়ন করা হচ্ছে নতুন একটি আইন।