
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার বাঘ মারা গ্রামে একটি মেছো বিড়ালকে নির্মমভাবে হত্যা করে কতিপয় স্থানীয় বাসিন্দা। গেল বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকারীরা বন্য বিড়ালটি মেরে গ্রামজুড়ে উল্লাস করে, এরপর বাঁশের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে মরদেহ। পাশাপাশি তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সেসব ছবি পোস্ট করে।
প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় দিকে উপজেলার বাগমারা গ্রামে সম্ভবত খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকে পড়লে গ্রামের কিছু যুবকের নজরে আসলে মেছো বিড়ালটিকে ধরে তারা। পরে এটিকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।
বাঁশখালীর স্থানীয় একজন সাংবাদিক জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে পুইছড়ি ও বাগমারা এলাকায় মেছো বাঘ (বিড়াল) দেখা যাবার কথা বলছিল স্থানীয়রা। লোকালয়ে ঢুকে বাড়ির হাঁস-মুরগি ও ছাগলের বাচ্চা খেয়ে ফেলছে বলে জানায় তারা। তিনি বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় গ্রামবাসী জোটবদ্ধ হয়ে ধাওয়া করে বাঘটিকে পিটিয়ে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখে। এ সময় বিপন্ন প্রজাতির মেছো বিড়ালটি দেখতে আশেপাশের কয়েকশ মানুষ ভিড় জমায়।
এ ঘটনা ফেসবুকে প্রচার হলে মুহুর্তেই ভাইরাল হয়। নিরীহ প্রাণী হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠে সামাজিক মাধ্যমে। বৃহষ্পতিবার রাতে বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম মিঠু ফেসবুকে এ ঘটনা শেয়ার করে মেছো বিড়াল হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান। শুক্রবারও ফেসবুকে এ ঘটনায় বিবেকবান মানুষেরা পোস্ট করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
জনমতের চাপে অবশেষে বাংলাদেশ বনবিভাগ মেছো বিড়াল হত্যায় মামলা করার উদ্যোগ নিয়েছে। বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক জহির উদ্দিন আকন বেঙ্গল ডিসকাভার-কে বলেন, এ ঘটনা অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকার রেঞ্জ অফিসার ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই আসামী সনাক্ত ও বন্যপ্রাণী আইনে মামলা করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
”আমরা আশা করি সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আমরা এই ঘটনাটির একটি দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে পারবো,” যোগ করেন জহির উদ্দিন আকন।
চট্টগ্রাম জেলার বন ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আবু নাছের জানান, গ্রামবাসীর মধ্যে সচেতনতার অভাবে এ ধরনের বিপন্ন প্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে। মোছো বিড়াল দেখলেই গ্রামবাসী অতি উৎসাহী হয়ে হত্যা করছে। এসব প্রাণী সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন তিনি।