বাংলাদেশের কক্সবাজার উত্তর ও দক্ষিণ এবং বান্দরবানের লামা বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর কোথাও বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে, আবার কোথাও হাতির বিচরণক্ষেত্রে নানা কায়দায় ফাঁদ পেতে হত্যা করা হচ্ছে বন্যহাতি। গেল ৯ মাসে এ অঞ্চলে ফাঁদ পেতে হত্যা করা হয় অন্তত ১১টি বন্যহাতি।
বারবার হাতি হত্যার ঘটনা ঘটে গেলেও বনবিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বরাবরের মতো দায়িত্ব এড়ানোর পন্থা অবলম্বন করছেন। তাদের মতে, ”পরিকল্পিত নয় হাতিগুলোর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।” তবে এ দাবি সত্য নয় বলছেন প্রাণীবিদ ও সংরক্ষণকর্মীরা। এতে প্রশ্ন উঠেছে, বন্যহাতির মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি পরিকল্পিত?
সবশেষ চকরিয়া-লামা সীমান্তের লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি খালখুইল্যা খোলার একটি পাহাড়ি ঝিরিতে বন্যহাতি মারা যাবার সন্ধান পায় এলাকাবাসী। এ হাতিটিকেও পরিকল্পিতভাবে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদ পেতে হত্যা করা হয়েছে। যার বৈদ্যুতিক শকের দাগ হাতিটির শরীরে বিদ্যমান রয়েছে। মেরে ফেলা এই হাতিটি পুরুষ এবং আনুমানিক বয়স ১৫ বছর। ওজন প্রায় দেড় টনের।
বান্দরবানের লামা বনবিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান দৈনিক আজাদীর কাছে দাবি করেন, ”হাতিটি ওপর থেকে ঝিরিতে পড়ে গিয়ে মারা পড়েছে। হাতিটির সুরতহাল প্রতিবেদনের সময়ও শরীরের কোথাও কোন জখমের দাগও নেই। তাই হাতিটি মাটিচাপা দেয়া হয়েছে।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনিচ্ছুক বন বিভাগের এক কর্মকর্তা দৈনিক আজাদীকে দিয়েছেন ভিন্ন তথ্য। তিনি বলেন, ”বাস্তব সত্য হচ্ছে, হাতিটিকে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদ পেতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। যার প্রমাণ মারা যাওয়া হাতির শুঁড়ে বড় একটি জখম রয়েছে। সেই জখমটি বৈদ্যুতিক শক খাওয়ার। এর পরও বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা দায়িত্ব এড়াতে গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন নিজেদের দোষ ঢাকতে।”
দৈনিক আজাদীতে প্রকাশিত তথ্য বলছে, গেল ৯ মাসে ফাঁদ পেতে হত্যা করা ১১টি বন্যহাতির মধ্যে আছে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন চকরিয়ার ফুলছড়ি রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৪টি, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের ঈদগড়ের ভোমরিয়াঘোনায় ১টি, উখিয়ায় ১টি, টেকনাফের হ্নীলায় ১টি, হোয়াইক্যংয়ে ১টি, বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কুমারী, ফাঁসিয়াখালীসহ তিন এলাকায় ৩টিসহ সর্বমোট ১১টি বন্যহাতি।
ধানক্ষেত, ফলজ বাগান ও বনভূমিতে গড়ে ওঠা বসতি রক্ষা করতেই বৈদ্যুতিক ফাঁদ ব্যবহারসহ নানা কায়দায় হাতিগুলোকে হত্যা করা হচ্ছে বলে দৈনিক আজাদীর খবরে উল্লেখ করা হয়। ১৩ জুন লামায় মারা যাওয়া বন্যহাতি নিয়ে তথ্যানুসন্ধানে চট্টগ্রামের স্থানীয় দৈনিক প্রকাশ করেছে পিলে চমকানো আরো তথ্য। বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন।