বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার হিমছড়ি সাগর সৈকতে ভেসে আসে ব্রাইডস হোয়েল প্রজাতির তিমির মরদেহ। ৯ এপ্রিল, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বালিয়াড়িতে পড়েছিল মৃত তিমিটি। মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন, স্থানীয় বন বিভাগ ও ও জেলা মৎস্য অধিদফতরসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের একাধিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পাশাপাশি মৃত তিমি দেখতে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেন সৈকতে।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম খালেকুজ্জামান জানান, মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মৃত তিমিটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সপ্তাহ দুয়েক আগে তিমিটি মারা গেছে। তবে কী কারণে মারা গেছে তা ময়নাতদন্তের পরই জানা যাবে।
“এই প্রজাতির তিমি বঙ্গোপসাগরে বিচরণ করে। বিশেষ করে সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দেখা যায়,” উল্লেখ করেন এস এম খালেকুজ্জামান।
কক্সবাজারের পরিবেশকর্মী আ ন ম মোয়াজ্জেম হোসেন রিয়াদ বলেন, খবর পাওয়ার পর এসে দেখি মৃত তিমির দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ময়না তদন্ত করে মারা যাওয়া কারণ নির্ণয় ও প্রকাশে বনবিভাগকে অনুরোধ করছি।
সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়াইল্ডলাইফ কনজার্ভেশন সোসাইটি- ডাব্লিউসিএস’র কর্মকর্তা সামিউল মোহসীন বলেন, মৃত তিমিটি ব্রাইডস হোয়েল প্রজাতির তিমি। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আইনে তিমি সংরক্ষিত প্রাণী।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, ১৯৯১ উখিয়ার ইনানী সৈকতে ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে হিমছড়ি সৈকতে এভাবে ভেসে এসেছিল বিশাল আকারের তিমি। এরপর আজ বিশাল এই মৃত তিমি হিমছড়ি সৈকতে ভেসে আসলো।
তিমি সিটাসিয়া বর্গভুক্ত জলজ স্তন্যপায়ী। যদিও তিমিকে প্রায়ই তিমি মাছ বলা হয়, এটি মোটেও মাছ নয়, বরং মানুষের মতই স্তন্যপায়ী প্রাণী। তিমিকে আরেকটি কারণেও মাছ বলা যায় না। সেটি হল, মাছেদের শ্বাস নেয়ার জন্য ফুলকা থাকে, কিন্তু তিমির শ্বাস নিতে আছে ফুসফুস। ব্যাপক নিধন ও সাগর দূষণের কারণে তিমির বেশ কিছু প্রজাতি এখন বিপন্ন প্রায়।