বাংলাদেশের চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বেঙ্গল টাইগার পরিবারে এসেছে নতুন অতিথি। গেল ১৪ নভেম্বর রাতে বাঘিনী তিনটি শাবকের জন্ম দিলেও দু’টি শাবক মারা যায়। বেঁচে থাকা শাবকটির সুরক্ষায় নেয়া হয়েছে বিশেষ পদক্ষেপ।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, দুর্ভাগ্যক্রমে বাঘিনী শাবকদের দুধ পান করতে দেয়নি এবং বাচ্চাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করে। খাবার না পেয়ে শাবক দু’টি দুর্বল ও সংকটাপন্ন ছিল। এতে মা বাঘের পর্যাপ্ত পরিচর্যার অভাবে ১৫ নভেম্বর রাতে একটি এবং ১৮ নভেম্বর আরো একটি শাবক মারা যায়। বাধ্য হয়ে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ শেষ শাবকটিকে আলাদা করে রেখেছে। বর্তমানে সেটিকে কিউরেটরের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর শাহাদাত হেসেন শুভ বেঙ্গল ডিসকাভার-কে বলেন, ”যে শাবকটি বেঁচে আছে সেটির অবস্থা কিছুটা ভালো, তবে এখনও সংকটমুক্ত বলার সময় আসেনি। নিয়মিত খাবার গ্রহণ করলে মাসখানেক পরে বাঘটির জীবন নিরাপদ বলে ধরে নেয়া যাবে। শাবকটির নিরাপত্তা ও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় এটিকে জনসাধারণসহ সকলের কাছ থেকে দূরে রাখা রয়েছে।”
”যারা বাঘ শাবকটির পরিচর্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত তাদের ব্যতীত অন্য কাউকে শাবকটির কাছে যেতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি,” উল্লেখ করেন কিউরেটর শাহাদাত হোসেন শুভ।
কর্তৃক্ষের ভাষ্য, অনেক সময় বাঘিনী প্রথমবার শাবকের জন্ম দেয়ার পর কীভাবে লালন-পালন করতে হয় তা বুঝে উঠতে পারে না এবং শাবককে পরিত্যাগ করে থাকে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এখন দুটি বাঘ ও চারটি বাঘিনী রয়েছে। ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর ১১ মাস বয়সী একটি বাঘ এবং ৯ মাস বয়সী একটি বাঘিনী দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৩৩ লাখ টাকায় কিনে আনা হয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়। তাদের নাম দেয়া হয় রাজ ও পরী।
২০১৮ সালের ১৯ জুলাই বেঙ্গল টাইগার দম্পতি রাজ-পরীর তিনটি ছানার জন্ম হয়। যার মধ্যে দু্টি ছিল সাদা বাঘ, অন্যটি কমলা-কালো ডোরাকাটা। পরদিন একটি সাদা বাঘ শাবক মারা যায়। অন্য সাদা বাঘিনীটি ‘শুভ্রা’। কমলা-কালো বাঘিনীটির নাম দেয়া হয় ‘জয়া’। এই জয়া গেল ১৪ নভেম্বর তিনটি শাবকের জন্ম দেয়।
এর আগে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর বাঘিনী পরী দুটি শাবকের জন্ম দেয়। পরদিনই একটির মৃত্যু হয়। বেঁচে থাকা শাবকটিকে প্রথমে ইনকিউবেটরে এবং পরে তিন মাস পর্দাঘেরা খাঁচায় নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়। সুস্থ হয়ে ওঠা শাবকটির নাম রাখা হয় মহামারীর সঙ্গে মিলিয়ে ‘করোনা’।