ডিম ও মাছরাঙ্গা পাখি হত্যাকারীর বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশের বরগুনা জেলার তালতলীতে গাছের কোঠরে বাসা বাঁধা মাছরাঙ্গা পাখি হত্যার করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়া যুবকের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনে মামলা করেছেন একজন পাখিপ্রেমী। ৯ জুন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাগর কর্মকার নামে এক পাখিপ্রেমী বাদী হয়ে তালতলী থানায় মামলাটি করেছেন।

জানা গেছে, গত ৮ জুন, সোমবার তালতলী উপজেলার বাসিন্দা অভিযুক্ত কামরুজ্জামান ফারুক গাছের কোঠর থেকে মাছরাঙা পাখি ধরে জবাই করে ডিমের পাশে রেখে সামাজিক যোগাযোগে আপলোড করে। সে তালতলী উপজেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।

ডিম ও মৃত পাখির ছবির পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সচেতন মহল ঘটনাটির প্রতিবাদ জানান। জনমতের তোপের মুখে পড়ে কামরুজ্জামান পরে নিজ ফেসবুক আইডিও বন্ধ করে ফেলেন।

মামলার বাদী সাগর কর্মকার বলেন, বিবেকের তাড়নায় আমি মামলা করেছি। আশা করি এ ঘটনাটির দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার হবে।

মাছরাঙা পাখি বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায়। মাছরাঙা প্রজনন সময় ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত। তবে বছরের যে কোনো সময়েও এ পাখি ডিম দেয়, বাচ্চা ফোটায়। জলাশয়ের খাড়া পাড়ে বা পুরনো গাছের কোঠরে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ২-৪-৬টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৯-২০ দিন। বাচ্চা উড়তে শেখে ২০-২৫ দিনে।

বরগুনার আইনজীবী সাইমুল রাব্বি গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, প্রোটেকটেড বার্ড বা সুরক্ষিত এসব পাখি শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ- এক বছর কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটলে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তাই আমি আশা করব প্রশাসন তার বিরুদ্ধে পাখি হত্যার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

জেলা ছাত্রদলের ১নং সহসভাপতি মিশকাত সাজ্জাদ জানান, ফারুক তালতলী উপজেলা ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক। এ নৃশংস ঘটনায় কামরুজ্জামান ফারুককে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।

তালতলী থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, পাখি হত্যার বিষয় তদন্ত করে, তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।