শঙ্খিনী কিংবা ডোরা শঙ্খিনী, নামে বেশ নম্রতা থাকলেও এই সাপের স্বভাবে নম্রতা আসে প্রাপ্তবয়স্ক হলে। বাচ্চা সাপের তেজ কিংবা বিষ মনে করিয়ে দেয় সেই চিরাচরিত প্রবাদ ‘ছোট মরিচের ঝাল বেশি’। এই সাপের বৈজ্ঞানিক নাম Bungarus Fasciatos হলেও ইংরেজিতে Banded Krait। এই সাপের আরো কিছু প্রচলিত নাম আছে- ভোঁতা লেজ কেউটে, ডোরা শঙ্খিনী, শাঁখামুঠি ইত্যাদি।
ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বেশি দেখা যায় এই সাপ। বাচ্চা অবস্থায় এদের দেহ কিছুটা মলিন সাদা রঙেয়ের হলেও প্রাপ্তবয়স্ক হতে থাকলে দেহাবরণ হয়ে যায় কালোর মধ্যে হলুদ ডোরাকাটা। অন্য সব প্রজাতির সাপের মত লেজের অংশটা সুচারু না হয়ে বরং একটু ভোঁতাই হয়। তাই হঠাৎ দেখায় লেজটাকেও মাথা ভেবে বসা অস্বাভাবিক না। আর ঠিক এই কারণেই অনেকে একে দুমুখো সাপ ও বলে থাকে। স্বভাবের মধ্যে মজার বিষয় হল, এই সাপ শিশু অবস্থায় বেশ হিংস্র ও আক্রমণাত্মক হয়।
বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ আসিফ বলেন, “শঙ্খিনী সাপ আমরা কমবেশি সবাই চিনি এবং এর লাজুক স্বভাবের কথাও জানি। কিন্তু বড় সাপ অত্যন্ত লাজুক ও অপেক্ষাকৃত শান্ত হলেও বাচ্চা সাপ খুবই চঞ্চল ও আক্রমণাত্মক হয়। সেই সাথে দ্রুতগামীও। এক কথায় বলতে গেলে অস্থির প্রকৃতির। কাছে গেলে তেড়ে আসাটা এদের পক্ষে স্বাভাবিক একটি ঘটনা।“
”অন্যান্য বিষধর সাপের বাচ্চার মত এদের বিষও অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এদের শরীরের রঙ গাঢ় হতে থাকে। তাই বাচ্চা শঙ্খিনী দেখলে কাছে গিয়ে না খেপানোর চেষ্টা করাই শ্রেয়। এরা প্রাপ্তবয়স্ক সাপের চেয়ে ভয়ংকর,” উল্লেখ করেন আদনান আজাদ আসিফ।
অনেকেই সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবেও মনে করেন শঙ্খিনী সাপকে। অন্য সাপের বাচ্চা কিংবা ডিম সাপটির প্রিয় খাবার। দিনের বেলা বেশ গুটিসুটি মেরে থাকলেও রাতে খাবারের সন্ধানে বের হয় দুমুখো নাম খ্যাত এই সাপ।