করোনাও ঠেকাতে পারেনি শেকৃবিতে গাছ নিধন!

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ নিধনের চিত্র। ছবি: সংগৃহীত

করোনা মহামারির ছুটিতে যখন ক্যাম্পাস ফাঁকা, তখনই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে- শেকৃবি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, রাস্ত প্রশস্ত ও সৌন্দর্য্য বর্ধনে গাছগুলো কাটা হচ্ছে। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, গাছগুলো কেটে ফেলায় সৌন্দর্যহানি হওয়ার সঙ্গে হারিয়েছে ক্যাম্পাসের চিরচেনা রূপও।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন থেকে লাইব্রেরীর পথ ধরে হলের সামনে পর্যন্ত সড়কের দু’পাশ ছিল শতাধিক দেবদারুর গাছ। যা অন্তত ২৫-৩০ বছর ধরে ক্যাম্পাসের অন্যতম সৌন্দর্যে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু এক বছর আগে রাস্তা প্রশস্তের কারণ দেখিয়ে একপাশের গাছ কর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে একাডেমিক ভবনের পাশের চারটি গাছ কেটেই সিদ্ধান্তটি বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু ১৭ জুন, বুধবার থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনের এক পাশের সব দেবদারু গাছ কাটা শুরু হয়েছে।

গাছ কাটার ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে প্রতিবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সচেতন মানুষ। শিক্ষক ও গবেষকরা বলছেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়ানো ক্যাম্পাসটি সবার কাছে ঢাকার ছোট্ট গ্রাম নামে পরিচিত। কিন্তু অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের কারণে গাছ নিধন করায় ধীরে ধীরে তা হারিয়ে যাওয়ার পথে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্ল্যানিং বিভাগের প্রধান আবুল কালাম আজাদ গাছ কর্তন কমিটিতে থাকলেও যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ”আমি গাছ কাটার বিষয়ে কিছু জানি না।” পরে প্রমাণ দেয়া হলে বলেন, “গাছগুলো অপরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থেই কাটা হচ্ছে, তবে এতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। কেটেছি তো অল্প কয়টি, আমরা ক্যাম্পাসে এক হাজার গাছ লাগাবো। ফলে পরিবেশের অবনতি নয় বরং উন্নতি হবে, সৌন্দর্যও বাড়বে।“

চিফ ইঞ্জিনিয়ার আজিজুর রহমান বলেন, রাস্তা প্রশস্থকরণ ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে মন্যুমেন্ট দৃশ্যমান করার জন্য ভিসি স্যারের অনুমতি নিয়েই কয়েকটি গাছ কাটা হয়েছে। তবে অন্য গাছ এখন কাটার আর পরিকল্পনা নাই।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গেল দুদিনে প্রশাসনিক ভবনের সামনের ১১টি গাছ কাটা হয়েছে। এর আগেও আরো ৪-৫টি কাটা হয়েছিল। এছাড়া কিছুদিন আগে অন্য রাস্তার পাশের আনুমানিক ২০টি জারুল গাছ, পুকুরে পাড়ের বিভিন্ন প্রজাতির বেশ কিছু গাছ কাটা হয়েছে। প্রতিবাদ দমাতে কৌশলে অল্প অল্প করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষগুলো নিধন করা হচ্ছে।