মিরপুরের আগুনে বেঁচে গেল কুকুরটি, কিন্তু…

পুড়ে যাওয়া বস্তি ঘরের ভেতরে বেঁচে যাওয়া কুকুরটি। ছবি: বেঙ্গল ডিসকাভার

হঠাৎ ছড়িয়ে পড়া আগুনে নিজেকে বাঁচাতে বস্তির একটি চালা ঘরের নিচে আশ্রয় নেয় কুকুরটি। কোন রকমে জানে বেঁচে গেলেও ভয়াবহ ঘটনাটি যেন কাটিয়ে উঠতে পারেনি কালো রঙের পথকুকুরটি।

১৬ আগস্ট, শুক্রবার বাংলাদেশের ঢাকার মিরপুরের সাত নম্বর চলন্তিকা মোড়ের বস্তিতে আগুন লাগে, ফায়ারকর্মীদের চেষ্টায় তা নিয়ন্ত্রণে আসার পরই এমন চিত্র দেখতে পান স্থানীয়া। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সময় টিভির সংবাদকর্মী কেয়ায়েত শাকিল।

তিনি জানান, পুড়ে যাওয়া এলাকাটির ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণে গেলে তারা দেখতে পান, সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও চালার নিচে দেখা যায় আশিংক পুড়ে যাওয়া একটি কালো কুকুর‌।

“স্থানীয় তরুণরা কুকুর‌টি‌কে উদ্ধা‌রের চেষ্টা করে। কিন্তু কো‌নোভা‌বেই কুকুর‌টি এখান থে‌কে যে‌তে চাচ্ছিল না। কুকুর‌টির পায়ের পেছ‌নের অংশ দগ্ধ হ‌য়ে‌ছে,” উল্লেখ করেন কেফায়েত শাকিল।

তিনি বলেন, “লাই‌ভ ফি‌ডে যুক্ত থাকা অবস্থায় ইমা‌র্জে‌ন্সি ক্যা‌মেরায় তুল‌ছিলাম। কুকুরটিকে উদ্ধার করতে ক‌য়েকজন যুবক‌কে অনুরোধ করি। তারা কো‌লে ক‌রে তুলে আনতে চেষ্টা করলেও কুকুরটি আসতে চাইছিল না।”

“মনে হচ্ছিল সে খুব ভয় পেয়ে ট্রমাতে আক্রান্ত হয়েছিল। এরপর কোনোভা‌বে ওই এলাকা ছাড়‌তে রাজ‌ি নয় কুকুরটি। ওখা‌নেই ঘাপ‌টি মে‌রে ব‌সেই ছিল,” যোগ করেন তিনি।

এ বিষয়ে প্রাণী কল্যাণে কাজ করা ‘প’ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রাকিবুল হক এমিল বেঙ্গল ডিসকাভার-কে বলেন, “কুকুরটির বিষয়ে আমরা খোঁজ নিতে শুরু করেছি।” তবে কেউ যদি ওর কোন তথ্য পায় তবে ০১৯৬৬৫৫৯৩১৪ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের অনুরোধ করেন এমিল।

দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষ ও অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলার পাশাপাশি আক্রান্ত প্রাণীদের বিষয়টি নিয়ে ভাববার ও সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে এখন গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন এসেছে বলে মন্তব্য করেন রাকিবুল হাসান এমিল। এজন্য ফায়ার সার্ভিস ও সংশ্লিষ্ট উদ্ধারকারী সংস্থাগুলোকে প্রাণী কল্যাণ কাজ করা সংগঠনগুলোর কর্মীদের প্রাণী উদ্ধারে বিশেষ প্রশিক্ষণে বিষয়টি নজর দিতে অনুরোধ জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধ্যার পর ভয়াবহ ওই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বস্তির ৫ শতাধিক ঘর। ফায়ার সার্ভিস সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।