বানরদের দেয়া খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল কতিপয় নিষ্ঠুর মানুষ। আর তা বিশ্বাস করে খেয়েই প্রাণ হারালো পনেরো অভুক্ত বানর। ৫ মে, মঙ্গলবার এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার চর মুগরিয়া নামক স্থানে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, এদিন বিকেলে কতিপয় যুবক বানরদের কলা, মুড়ি ও চিড়া খেতে দিয়ে চলে যায়। খাবার খাওয়া মাত্রই মুখ দিয়ে রক্ত বেরুতে থাকে বানরের দলের। তাৎক্ষণিক মাটিতে ঢলে পড়ে কয়েকটি বানর। পরবর্তীতে ১২টি বানর প্রাণ হারায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় সদর মডেল থানায় অভিযোগও দায়ের করেছে সামাজিক বন বিভাগ। মাদারীপুর সামাজিক বন বিভাগের কর্মকর্তা ইদ্রিস মিয়া জানান, চরমুগরিয়ায় দুই থেকে আড়াই হাজার বানর বসবাস করে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত বানরগুলোকে খাবারও দেয়া হতো।
”ওই এলাকার ১২টি বানর মারা যায়। স্থানীয়রা ১১টি বানরকে মাটিচাপা দেয়। নমুনা হিসেবে মৃত একটি বানরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেয়া হয়েছে । এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে,” উল্লেখ করেন ওই বন কর্মকর্তা।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক এস এম জহির উদ্দিন আকন বলেন, চর মুগরিয়া কলেজ রোডে বিষ দিয়ে বানর হত্যার যশোর বন সংরক্ষক, ফরিদপুরের ডিএফও এবং সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেছি। ফরিদপুর সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি টিম সরেজমিনে তদন্ত করেছে।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসনও এ বিষয়ে নজরদারি করছে। ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান জহির উদ্দিন আকন।
জানা গেছে, শত বছরের বেশি সময় ধরে বানরগুলো মাদারিপুরের ওই এলাকায় বসবাস করে আসছিল। তবে নির্মম হত্যাকাণ্ডটি ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে প্রাণী সংরক্ষণে কাজ করা সংগঠন ও কর্মীরা। তারা জানান, এ ঘটনায় বেঁচে যাওয়া বানরদের অবস্থাও শোচনীয়।
বনবিভাগের যশোর সার্কেলের বন সংরক্ষক মোল্লাহ রেজাউল করিম বলেন, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, সামাজিক বন বিভাগ, ফরিদপুরের নেতৃত্বে একটি টিম সরেজমিনে তদন্ত করেছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।